অবশেষে জট কাটল! রাজ্যে ১৭৪৩ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগে হাইকোর্টের সবুজ সঙ্কেত, জানুন নতুন ৫০:৫০ নিয়ম
রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য, বিশেষ করে মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য একটি যুগান্তকারী খবর। দীর্ঘ দুই দশকের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগে যে জট তৈরি হয়েছিল, তা অবশেষে কেটে গেল। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ প্রায় ১,৭১৩টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।
এই রায়টি রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর মনে নতুন করে আশা জাগিয়েছে। আসুন, এই নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি, বিশেষ করে হাইকোর্টের নির্দেশিত ৫০:৫০ অনুপাতের নিয়মটি বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ কী নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট?
শুক্রবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ একটি ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়েছে যে, রাজ্যে ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভলপমেন্ট স্কিম (ICDS) এর অধীনে আটকে থাকা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া আবার শুরু করতে হবে।
- মোট শূন্যপদ: ১,৭১৩টি
- রায়: নিয়োগে আর কোনও বাধা রইল না।
- মূল ভিত্তি: একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে সরাসরি নিয়োগ এবং পদোন্নতির মাধ্যমে এই শূন্যপদ পূরণ করতে হবে।
নিয়োগের নতুন ফর্মুলা: ৫০:৫০ অনুপাতটি আসলে কী?
হাইকোর্ট একটি অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট এবং ভারসাম্যপূর্ণ নিয়োগ পদ্ধতির নির্দেশ দিয়েছে, যা “৫০:৫০ অনুপাত” নামে পরিচিত। এর ফলে নতুন এবং অভিজ্ঞ, উভয় কর্মীরাই সমান সুযোগ পাবেন।
১. ৫০% সরাসরি নিয়োগ (Direct Recruitment)
মোট শূন্যপদের অর্ধেক, অর্থাৎ প্রায় ৮৫৬টি পদ সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এর অর্থ হল, রাজ্য সরকার এই পদগুলির জন্য নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। যোগ্যতাসম্পন্ন নতুন চাকরিপ্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। এটি রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ।
২. ৫০% পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ (Promotion Basis)
বাকি অর্ধেক পদ পূরণ করা হবে অভিজ্ঞতার নিরিখে। যে সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিষ্ঠার সাথে কাজ করছেন, তাঁদের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এই পদগুলি তাঁদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে যেমন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে, তেমনই অভিজ্ঞ কর্মীদের কাজের যোগ্য সম্মান দেওয়া হবে।
কেন আটকে ছিল এই নিয়োগ?
অঙ্গনওয়াড়ি সুপারভাইজার পদে পদোন্নতির নিয়ম না মানা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, পদোন্নতির জন্য মেধাতালিকা প্রকাশ করার পরেও রাজ্য সরকার সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু রাখে। मामलाটি প্রথমে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং পরে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে পৌঁছায়। অবশেষে ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রেখে নিয়োগের পথ পরিষ্কার করে দেয়।
এক নজরে সম্পূর্ণ বিষয়টি
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
নিয়োগকারী সংস্থা | ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভলপমেন্ট স্কিম (ICDS), পশ্চিমবঙ্গ |
পদের নাম | অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী (Anganwadi Worker) |
মোট শূন্যপদ | ১,৭১৩ |
নিয়োগ পদ্ধতি | ৫০% সরাসরি নিয়োগ, ৫০% পদোন্নতি |
আদালতের রায় | নিয়োগে আর কোনও বাধা নেই |
এরপর কী? চাকরিপ্রার্থীদের কী করণীয়?
হাইকোর্টের রায়ের পর রাজ্য সরকারের কোর্টে। আশা করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
- নতুন আবেদনকারীদের জন্য: আপনারা শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সসীমা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি সংক্রান্ত তথ্যের জন্য দপ্তরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে (https://wbicds.in/) নজর রাখুন এবং পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করুন।
- অভিজ্ঞ কর্মীদের জন্য: আপনারা পদোন্নতির নিয়মাবলী এবং নিজেদের সার্ভিস রেকর্ড সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ব্লক বা জেলা স্তরের ICDS আধিকারিকদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন।
এই রায়টি পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ও শিশুকল্যাণ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। এই গুরুত্বপূর্ণ খবরটি সকলের সাথে শেয়ার করুন এবং চাকরির সমস্ত আপডেটের জন্য আমাদের সাথে থাকুন।
In this browser for the next time
Hi
Hello